রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলাঃ আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তে হতাশ মিয়ানমার


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুলাই ২৪, ২০২২, ৮:০০ অপরাহ্ণ /
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলাঃ  আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তে হতাশ মিয়ানমার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলা নিয়ে আপত্তি জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে দেশটির সামরিক সরকার। এ নিয়ে গত শুক্রবার (২২ জুলাই) বিবৃতি প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলা নিয়ে মিয়ানমারের সমস্ত আপত্তি খারিজ করেছে। এর ফলে ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারে বিরুদ্ধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির করা মামলার শুনানি চলতে আর কোনো বাধা থাকল না।

এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের সামরিক সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক আপত্তি প্রত্যাখ্যান করায় হতাশ মিয়ানমার।’

তাদের দাবি যেসব কারণে এই মামলা নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল সেগুলো আইনগতভাবে শক্তিশালী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একজন বিচারকের একটি ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া শুনানিতে অংশ নিয়ে মিয়ানমার মামলা নিয়ে আপত্তি তুলে ধরে। তাদের যুক্তি, গাম্বিয়া রাষ্ট্র হিসেবে নয় ৫৭ দেশের জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন-ওআইসি এর ‘ছায়া’ হিসেবে এই মামলা করেছে। যেখানে আইসিজে এর নিয়ম অনুযায়ী শুধু রাষ্ট্রই মামলা করতে পারে, কোনো জোট নয়।

মিয়ানমারের আরেকটি যুক্তি ছিল গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়া সরাসরি কোনো পক্ষে যুক্ত নয়। তাই মামলা করার এখতিয়ার তাদের নেই এবং আদালত প্রাথমিক অবস্থাতেই যাতে এটি খারিজ করে সেই দাবি জানায় তারা। তবে আইসিজে এর বিচারকরা মিয়ানমারের যুক্তিগুলো প্রত্যাখ্যান করেন এবং মামলা চলমান রাখার বিষয়ে শুক্রবার রায় দেন।

২০১৭ সালে জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি ছেড়ে পালিয়ে আসেন। তাদের বড় অংশ বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর চালানো খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের বিভীষিকাময় একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যম ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের আচরণ ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সংক্রান্ত কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। এই মামলায় দেশটিকে সহায়তা দেয়ার কথা বলেছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও।

এই মামলায় পূর্ণ শুনানি এবং চূড়ান্ত রায় দিতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে।

%d bloggers like this: