৭ দিন ধরে নিখোঁজ থাকা আইনজীবী আবুল হোসাইন রাজনকে পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে রাজধানীর হাতিরঝিল থানা পুলিশ। বিস্ফোরক আইনে দায়ের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলা নম্বর-৫০। গত বছরের ৩১শে ডিসেম্বর হওয়া মামলায় তাকে গত শনিবার রাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল দুপুরে আদালতে তোলে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ডের বিষয়ে আগামী ৬ই ফেব্রুয়ারি শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
এদিকে সাত দিন ধরে হাতিরঝিল থানা হেফাজতে আইনজীবী রাজনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। আদালত প্রাঙ্গণে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন এই আইনজীবী। রাজন জানান, তার পুরো শরীরে নির্যাতন করা হয়েছে। এ বিষয়ে রাজনের স্ত্রী শামীমা সুলতানা বলেন, প্রথমে আমাদেরকে রাজনের সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছিল না।
পরবর্তীতে অনেক অনুরোধ করে তার সঙ্গে দেখা করি। এ সময় কেমন আছেন জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাজন। তাকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতন করা হয়েছে। রাজনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী। তিনি তার পেশাগত কাজের বাইরে কোনো খারাপ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। তাকে সন্দেহবশত নির্যাতন এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৩০শে ডিসেম্বর হাতিরঝিল থানা এলাকায় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বেআইনি জনসমাগম করে। তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে গণমিছিল করার সময় রাষ্ট্রীয় নাশকতা ও ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম করার জন্য রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলেও এজাহারে অভিযোগ করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আসাদ বিন আব্দুল কাদির মিডিয়াকে বলেন, ডিসেম্বর মাসে হওয়া নাশকতার মামলায় রাজনকে শনিবার রাতে মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিস্তারিত তথ্য পেতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত আগামী ৬ই ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
মামলার আইনজীবী আজমত হোসেন বলেন, রাজনকে গত সাত দিন ধরে পুলিশি হেফাজতে রেখে শারীরিকভাবে প্রচন্ড নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি অসুস্থ’। তার মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। রাজনের মামলার রিমান্ডের বিষয়ে আদালত আগামী ৬ই ফেব্রুয়ারি পুনঃশুনানি করবেন বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :