টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করেছিল টাইগাররা। এবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বিশ্বসেরাদের ১৬ রানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০তে জয় লাল সবুজদের।
অবশ্য এর আগে একবারই তিন বা এর বেশি ম্যাচের সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছিল বাংলাদেশ।, ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডকে, ২০২০ সালে জিম্বাবুয়েকে ২-০ এবং গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতকে একই ব্যবধানে হারায় তারা।
অন্যদিকে ইতিহাসে টি-টোয়েন্টিতে কেবল তৃতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশড হলো ইংল্যান্ড। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ হেরেছিল ৩-০ ব্যবধানে। ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছিল ২-০ ব্যবধানে। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে।
হোয়াটওয়াশের লজ্জা এড়াতে ১৫৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪২ রান তোলে বাটলার বাহিনী।
রানের তাড়া নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ইংলিশরা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সল্টকে শূন্য রানে ফিরিয়ে ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন অভিষিক্ত স্পিনার তানভীর ইসলাম। অবশ্য দলীয় ৫ রানে সল্টকে হারানোর পর মালান-বাটলারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা। দ্বিতীয় উইকেটে জস বাটলারকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চাশ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথেই রাখেন এই ওপেনার।
প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ মালান সিরিজের শেষ ম্যাচে এসে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ৪৩ বল খেলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি। এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৩ রান করে মুস্তাফিজের বলে উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। মালান ফেরার পরের বলেই রান আউটে কাটা পড়েন বাটলার। ইংলিশ অধিনায়ক সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪০ রান। একই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে আবারও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। বিপরীতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় ইংল্যান্ড।
এরপর মঈন আলিকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাসকিন আহমেদ। ৯ রান করা এই অলরাউন্ডারকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান এই পেসার। একই ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটকে বোল্ড করেন তাসকিন। এর ফলে ২ উইকেটে ১০০ থেকে ১২৩ এ পৌঁছাতে আরও তিন উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।
শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য ৩১ রান প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই স্যাম কারানকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর লেগের সারির ব্যাটাররা চেষ্টা করলেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
এর আগে মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেম নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৮ রান রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমাত্মক ছিলেন লিটন-রনি। দারুণ শুরুর পর দলীয় ৪৪ আর্চারের বলে নিশ্চিত ক্যাচ থেকে বেঁচে যান রনি তালুকদার। ব্যাক্তিগত ১৮ রানে জীবন পেয়ে নিজের ইনিংস বড় করতে পারেনি এই ওপেনার।
২২ বলে ২৪ রান করে আদিল রশিদের বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। এরপর শান্তকে সাথে নিয়ে ৪১ বলে ৮ বাউন্ডারিতে লিটন হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। ১২.৩ ওভারে ১ উইকেটে বাংলাদেশের দলীয় রান তখন ১০১। হাফসেঞ্চুরির পর নিশ্চিত ক্যাচ মিসে জীবন পান লিটন। ১৪তম ওভারে আর্চারের প্রথম বলে লিটনের ক্যাচ মিস করেন ডাকেট। নতুন জীবন পেয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন এই ওপেনার।
কিন্তু দলীয় ১৭ ওভারের শেষ বলে ক্রিস জর্ডানের বলে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ে শান্তর সাথে ৫৮ বলে ৮৪ রানের জুটি ভাঙে যায়। লিটন দলীয় ১৩৯ রানে বিদায়ের পর ক্যাপ্টেন সাকিবকে সাথে জটি গড়েন শান্ত। কিন্তু এরপর রানে গতি কিছু কমে যায় বাংলাদেশের। শেষ তিন ওভারে মাত্র ২১ রান করে বাংলাদেশ। শান্ত ৩৬ বলে এক বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় অপরাজিত ৪৭। কিন্তু সাকিব ৬ বলে মাত্র ৪ রান করে অপরাজিত থাকেন।
আপনার মতামত লিখুন :