স্টাফ রিপোর্টারঃ
নিয়মনীতি উপেক্ষা করে খুলনা মহানগরীর পশ্চিম টুটপাড়া মহির বাড়ি খালপাড়ে ডিভাইন‘মিনারেল ওয়াটার’ নামধারী একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। বিএসটিআই’র লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। এমন কি অত্র প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অত্যাধুনিক ল্যাবের ব্যবস্থা। সরবরাহ করা এই পানি পানের মাধ্যমে বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে এ অঞ্চলের মানুষ। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন।
(বিএসটিআই) সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় খাবার পানি সরবরাহকারী ২৪ প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং বিশুদ্ধতা পরিমাপ করে তারা ৮টি কোম্পানিকে লাইন্সেস দিয়েছেন। আর লাইসেন্স না পেয়েও অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বাকি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দু’টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা এবং দু’টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
বিএসটিআইয়ের সূত্র জানায়, সরকারিভাবে এ তালিকা থাকলেও অবৈধ কোম্পানির সংখ্যা দ্বিগুণ। খুলনায় আরো অবৈধ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে নগরীর নিরালা এলাকার ইকো ড্রিংকিং ওয়াটার, ফারাজীপাড়া লেনের জুনায়েদ অসমো, দৌলতপুর পাবলা এলাকার বার্নিল এন্টারপ্রাইজ, টুটপাড়ার এফএস সিন্ডিকেট, মুসলমানপাড়ার প্যারিস করপোরেশন এবং পশ্চিম বানিয়াখামার এলাকার বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ। আর মামলা জটিলতায় রয়েছে জোনায়েদ অসমো, প্যারিস করপোরেশন, বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ ও বার্লিন এন্টারপ্রাইজ নামের চারটি প্রতিষ্ঠান। বিএসটিআইয়ে আবেদন না করেই ব্যবসা পরিচালনা করছে এমন আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, লাইসেন্স গ্রহণ না করা, নোংরা পরিবেশে উৎপাদন করা, মিনারেল ওয়াটারের লেবেলে মূল্য তালিকা ও উৎপাদনের তারিখ না রাখা ইত্যাদি কারণে ইতিমধ্যে অনেক কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএসটিআই’র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান জানান, অনুমোদনহীন পানি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। আপনারা তুলে ধরেন আমরা খুব দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিএসটিআই’র উপ-পরিচালক দীপঙ্কর দাস বলেন, জনবল সংকটের কারণে আমাদের পক্ষে সব সময় ৬৯টি উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়না। তার পরেও আমরা নিয়মিত ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকি। আপনারা তুলে ধরেন আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর খুলনার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম হোসেন জানান, লাইসেন্স থাকলেও পানির কোম্পানিগুলো যদি নোংরা পরিবেশে উৎপাদন করে, মিনারেল ওয়াটারের লেবেলে মূল্য তালিকা ও উৎপাদনের তারিখ না রাখে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়। খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, বিশুদ্ধ পানির নামে নোংরা পানি পান করলে ডায়রিয়া, টাইফায়েড, জন্ডিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাজেই এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
এদিকে গত বুধবার আমাদের প্রতিনিধি নগরীর টুটপাড়া মহীরবাড়ি খালপাড়ে ডিভাইন খাবার পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পানি উৎপাদন করা হচ্ছে। এমনকি এ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে তাদের বোতল জারে বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহার করছে। প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. জাকির হোসেন বলেন আমরা এভাবেই ব্যবসা করে আসছি এখনো পর্যন্ত কোনো অসুবিধা হয়নি। তিনি আরো বলেন খুলনা শহরে এরকম আরো অবৈধ ২৭ টি পানি কোম্পানি রয়েছে আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তারপরে আমার কাছে আসতে বলেন।
আপনার মতামত লিখুন :