বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যানে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন করে চীন : ইয়াও ওয়েন


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : মার্চ ১৫, ২০২৩, ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ /
বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যানে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন করে চীন : ইয়াও ওয়েন

বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতি চীন সব সময় ধারাবাহিক নীতি বজায় রেখেছে। চীন সব সময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে বাংলাদেশের যে অবস্থান, চীন তা সমর্থন করে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেন ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেছেন, ওই সময় থেকে দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের নানা স্তরের লোকজনের আন্তরিকতা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। তার মতে, ঢাকা- বেইজিংয়ের সম্পর্কের যে ভবিষ্যৎ আর সম্ভাবনা, সেটা সরকারকে ছাড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিস্তৃত হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রতি চীনের সমর্থনের প্রসঙ্গ টেনে ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন সব সময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার। বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যানের যে অবস্থান মেনে চলে, তার প্রতি চীনের সমর্থন আছে। তিনি আরো বলেন, উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে চীন ও বাংলাদেশের স্বার্থ অভিন্ন। ফলে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের আরও ভ‚মিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ ও স্মার্ট বাংলাদেশের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। দুই দেশ একসঙ্গে বিকশিত হতে পারে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে এ দেশের রাজনীতিবিদদের মতপার্থক্য নেই, মঞ্চে উপস্থিত তিনটি দলের প্রতিনিধিরা সেটার প্রমাণ দিচ্ছেন। তারা সবাই এ সম্পর্কের সমর্থক। চীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্কে বিশ্বাসী।

চীনের মধ্যস্থতায় সউদী আরব ও ইরানের মধ্যে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের পাশাপাশি বিরোধী দেশগুলো সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে নিতে পারে, সেই দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সংলাপ ও শান্তির বিজয় হয়েছে।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে আমীর হোসেন আমু বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন জোরালো ভ‚মিকা রাখলে বাংলাদেশের জনগণ আরও বেশি সন্তুষ্ট হতো। রাশিয়া ও ইউক্রেনের বর্তমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীনের সক্রিয় ভ‚মিকাও প্রত্যাশিত।

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, চীন এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। এখন পর্যন্ত চীন যেভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, সেটা কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেরও সেটা করার সামর্থ্য নেই।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা হচ্ছে, চীন তাতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা।

চীনের রাষ্ট্রদূতকে দেওয়া সিল্ক রুট ফোরামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক আমীর হোসেন আমু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এবং কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মো. শাহ আলম। আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের চেয়ারম্যান দিলীপ বড়ুয়া।

%d bloggers like this: